এবার বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই নদী, নালা, খাল, বিল, জলাশয়গুলো পানিতে ভরপুর হতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মরা নদীগুলোও পানিতে ভরে গেছে। এ সময় এখানে-সেখানে যাতায়াত একটু কঠিন হয়ে পড়ে। তেমনি নাটোরের গুরুদাসপুরের বাসিন্দারাও পড়েছেন মহাবিপদে। তারা মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই বিভিন্ন খেয়াঘাটে দড়ি টেনে নদী পারাপার হচ্ছেন।

পৌর সদরের গুরুদাসপুর বাজার খেয়াঘাটসহ উপজেলার মোল্লাবাজার সংলগ্ন নন্দকুঁজা নদীতে স্ব-উদ্যোগে দড়ি টানাটানি করে নৌকায় করে নদী পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, এসব খেয়াঘাটে নৌকা থাকলেও মাঝি নেই। খেয়ার নৌকা দুপারে আনা-নেওয়ার জন্য তাই টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে নাইলনের দড়ি। ব্রিজের অভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ যাত্রীরা সেই দড়ি টেনে নদী পারাপারে প্রায় সাত বছর কাটিয়ে ফেলেছেন। এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ১০ গ্রামের হাজারও মেহনতি মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাত বছরের শিশু রিয়াদ নামের এক স্কুলছাত্র দড়ি টেনে মোল্লাবাজারের খেয়া নৌকায় নদী পারাপারের সময় পানিতে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেশি মেহেদী হাসান পানিতে ভাসমান রিয়াদের কাঁধে থাকা স্কুলব্যাগটি টেনে ধরে তার জীবন বাঁচান। এভাবে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ দড়ি টেনে খেয়া নৌকায় নন্দকুঁজা নদী পারাপার হচ্ছে।

নদীটির উত্তরপাশে রয়েছে বাজার, মাধ্যমিক ও কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ ঘনবসতিপূর্ণ ছয়টি গ্রাম। দক্ষিণপাশে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি স্কুল এবং মোল্লাবাজার নামে একটি বাজার। তাছাড়া উপজেলা সদর এবং দেশের অভ্যন্তরীণ জেলা সদরে যাতায়াত করতে নদী পারাপারের জন্য ওই নৌকাটিই একমাত্র ভরসা।

এ প্রসঙ্গে নদীটির উত্তরপাড়ের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষিকা নাসরিন সুলতানা জানান, মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে স্থানীয় সাংসদসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেক আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। ব্রিজের অভাবে ১০ গ্রামের মানুষকে প্রতিদিন জানমালের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পারাপার হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আবদুল কুদ্দুস বলেন, নন্দকুঁজা নদীতে দুই দফা ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু ঘাটের উভয়পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করায় ব্রিজের জায়গা সংকট দেখা দেয়। তাই অনুমোদিত ব্রিজটি অন্যত্র নির্মাণ করা হয়েছে।

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জায়গার সমাধান হলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই জায়গায় ব্রিজ নির্মাণ করা হবে বলেও জানান ওই সংসদ সদস্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here