সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তিসম্পন্ন মোবাইল ফোন। দিন দিন বাড়ছে এর প্রতি আসক্তিও। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, মোবাইল থেকে নির্গত রেডিয়েশনের প্রভাবে শরীরে হচ্ছে মারাত্মক ক্ষতি। ফলে বাড়ছে প্রসবকালীন সমস্যা এমনকি মিসক্যারেজও।

আর তাই গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ডিভাইস থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কেননা, মোবাইলের কারণে যে শুধু মা এবং বাচ্চারই ক্ষতি হয়, এমন নয়। যে কারও শরীরে ক্যান্সারের মতো ৬টি মারাত্মক ক্ষতি করে বিভিন্ন ডিভাইস। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যায় মোবাইল ফোনের ক্ষতিকারক দিকগুলো…

অনিদ্রার সমস্যা দেখা দেয়
মোবাইল ফোনের আলো নানা ভাবে শরীরে মেলাটনিন হরমোনের ক্ষরণ কমিয়ে দেয়। ফলে সহজে ঘুম আসতে চায় না। কারণ ঘুম কতটা ভাল হবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণের উপর। তাই শুতে যাওয়ার আগে মোবাইল বন্ধ করে ঘুমানোই শ্রেয়। ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে
মোবাইল ফোনের শরীরে থেকে যে নীল আলো বেরিয়ে আসে তার প্রভাবে শরীরের সকল হরমোনের ক্ষরণে বাঁধা আসতে শুরু করে। ফলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ কমতে থাকে। প্রসঙ্গত, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল এমন একটি শক্তিশালী উপাদান, যা শরীর থেকে টক্সিক উপাদানদের বের করে দিয়ে ক্যান্সার কোষের জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা কমায়। তাই তো ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে হলে মোবাইলের অধিক ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। মোবাইল ফোন এবং বন্ধ্যাত্ব
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ,মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শরীরে এমন পরিবর্তন দেখা দেয়, যে বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দেখা দেয়। কারণ মোবাইলের রেডিয়েশনের কারণে বীর্য উৎপাদনকারী কোষেরা এত মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় যে শুক্রাণুর মান কমতে শুরু করে। সেন্টার ফর রিপ্রোডাক্টিভ মেডিসিনের গবেষকরা মোবাইল ফোনের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে আরও জানতে একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। ৩২ জন পুরুষের কাছে থেকে স্পার্ম সংগ্রহ করে সেগুলোর পাশে মোবাইল ফোন রেখে দেখতে চেয়েছিলেন বীর্যের উপর রেডিয়েশনের কেমন প্রভাব পরে। এমনটা করতে গিয়ে তারা লক্ষ করেন মোবাইল ফোন রাখার আগে স্পার্মের যা কোয়ালিটি ছিল, তার থেকে অনেকটাই কমে গেছে। ফোন বক্ষবন্ধনীর মধ্যে রাখবেন না
মার্কিন ব্রেস্টলিঙ্ক সংস্থার করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, স্তন ক্যান্সারের সঙ্গে মোবাইল ফোনের সরাসরি যোগ রয়েছে। গবেষকর জানিয়েছেন, অন্তর্বাসের মধ্যে ফোন রাখলে শরীরে বিশেষ কিছু অংশে রেডিয়েশনের মারাত্মক প্রভাব পড়ে, বিশেষ করে স্তনে। এমনটা যদি দীর্ঘদিন চলমান থাকলে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাবে। মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়
মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ফোন ঘাঁটলে ঘুম ঠিক মতো হয় না। আর ঘুম যদি ঠিক মতো না হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতাও কমতে শুরু করে। ফলে স্মৃতিশক্তি যেমন লোপ পায়, তেমনি মনযোগ ও বুদ্ধির ঘাটতিও দেখা দেয়। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কে রক্তের প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। রেটিনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়
অন্ধকারে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তার নীল আলো রেটিনার কার্মক্ষমতা কমাতে শুরু করে। দীর্ঘ দিন ধরে যদি এমনটা চলতে থাকে তাহলে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here