বিশ্বকাপ ফুটবল দোরগোড়ায়। ফুটবলপ্রেমীরাও নিচ্ছেন বিশেষ প্রস্তুতি। জার্সি, প্রিয় দেশগুলোর পতাকার পাশাপাশি বিশ্বকাপ রেপ্লিকা সংগ্রহ করছেন ভক্তরা। আর এতে জমে উঠেছে মৌসুমি ব্যবসার রমরমা বাজার।

ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব বিপণিবিতান ছেয়ে গেছে প্রিয় দলের জার্সিতে। সঙ্গে রয়েছে পতাকা ও হাতের ব্যান্ডসহ বাহারি সব পণ্য। ক্রেতাদের সরব উপস্থিতিতে জমে উঠেছে বেচাকেনা।

জানা গেছে, বিশ্বকাপ ফুটবলকে সামনে রেখে পাইকারি ক্রীড়া সামগ্রীর বাজার গুলিস্তান সমবায় মার্কেটে মে মাসে প্রায় ৫০ লাখ টাকার জার্সিসহ বিভিন্ন পণ্য বেচাকেনা হয়েছে। পাশেই বঙ্গ মার্কেটেও পাইকারি জার্সি বিক্রি হচ্ছে।

এ দুই মার্কেট থেকে ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকার ফুটবল আয়োজনের নানা পণ্য স্থানীয় পর্যায়ে বিক্রি হবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

ক্রীড়া সামগ্রীর পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকার খুচরা বিক্রেতাদের কাছে গত মাসে জার্সি বেশি বিক্রি হয়েছে। এখন রাজধানীর খুচরা বিক্রেতারা বেশি নিচ্ছেন।

এখন প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার জার্সি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর ক্রীড়াসামগ্রী বিক্রির সবচেয়ে বড় বাজার গড়ে উঠেছে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামকে কেন্দ্র করে।

ক্রীড়াসামগ্রীর পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ‘রিগ্যাল স্পোর্টস’। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বিশ্বকাপ উপলক্ষে ৯ লাখ জার্সি বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন। রিগ্যাল স্পোর্টস ম্যানেজার নাজিমুদ্দিন বাবু বলেন, ‘আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের জার্সি চাহিদা ক্রেতাদের আগ্রহের তুঙ্গে। জার্মানি, পর্তুগাল, ইতালি, স্পেনের জার্সির চাহিদাও মন্দ নয়। ক্রেতাদের চাহিদা মেটানোর মতো পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে আমাদের।’

জানা যায় থাইল্যান্ড ও চায়না থেকে আমদানিকৃত জার্সিগুলো সাধারণত ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও আরও চড়া মূল্য রাখা হচ্ছে। তবে ফুটবলামোদীরা বেশি ভিড় করছেন ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসা দোকানিদের কাছে। যেখানে ১০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে মিলছে বিভিন্ন দেশি জার্সি। স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত এ জার্সিগুলোই আবার আমদানিকৃত দাবি করে তোলা হয়েছে বিভিন্ন বিপণিবিতানে। তাতে অনেক ক্রেতাই বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহীন ২০ বছর ধরে জার্সি ব্যবসা করছেন। এবার জার্সি চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলেই জানালেন তিনি, ‘অন্যান্য বিশ্বকাপের তুলনায় এবার জার্সি বিক্রি অনেক বেড়েছে। আমরা জার্সি অর্ডার দিয়েও পাচ্ছি না।

চীন থেকে যেসব জার্সি আনি সেগুলোর প্রতিটি কয়েক দিন ৫ ডলার বেশি দামে কিনে নিয়ে যাচ্ছে অন্যান্য দেশ।’ তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা নারায়ণগঞ্জ ও বঙ্গবাজার থেকে জার্সি এনে ক্রেতাদের সরবরাহ করছেন।

এখানে হাফ হাতা জার্সি ৬০০ ও ফুলহাতা জার্সি ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে স্থানীয় কাপড়ে তৈরি জার্সিগুলো পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেই।

শুধু জার্সিই নয়, বিক্রি হচ্ছে নানান দেশের পতাকা। এসব পতাকা তৈরির জন্য কাজের ফুরসত নেই পোশাকের কারিগর দর্জির দোকানগুলোতে। গুলিস্তান ও সদরঘাট এলাকার মার্কেটগুলোতে সবেচেয়ে বেশি পতাকা পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে।

তবে রাজধানীর সব এলাকায় কমবেশি সব দর্জি পতাকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জার্সি ও পতাকার হঠাৎ এ চাহিদায় মৌসুমি ব্যবসা করছেন কয়েক হাজার মানুষ।

পতাকা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ টাকা থেকে ১৫শ’ টাকা পর্যন্ত দামের বিভিন্ন দেশের পতাকা বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ফুটবল খেলুড়ে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ফুটবলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পতাকা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here