কাগজ অনলাইন ডেস্ক: ডায়াবেটিক ফুট নিয়ে অনেকে চিন্তিত থাকেন। কারণ এই রোগের চিকিৎসা বলতেই অনেকের ধারনা পা কেটে ফেলতে হবে। না হলে মোটা অংকের টাকা খরচ করে রোগটির চিকিৎসা করাতে হবে। কিন্তু এই ধারনাগুলো একেবারে ভুল। কারণ দেশে বর্তমানে এই রোগের উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে। আর চিকিৎসার খরচও কম। তবে মনে রাখতে হবে ৫/১০ বছর বা তার চেয়ে বেশি দিন ডায়াবেটিস থাকলে রোগীর কিছু জটিলতা দেখা দেয় তার মধ্যে ডায়াবেটিক ফুট বা ডায়াবেটিক পা অন্যতম।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি স্বীকৃত ডায়াবেটিস ও ডায়াবেটিক ফুট চিকিৎসক ডা. এম. মঞ্জুর আহমেদ বলেন, ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। নিয়মিত পায়ের যত্ন নিতে হবে, সব সময় পা পরিস্কার ও শুকনা রাখতে হবে, ডায়াবেটিক মোজা এবং জুতা ব্যবহার করতে হবে। পায়ে যাতে কোনও আঘাত না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ঘরে বাইরে কোথাও খালি পায়ে হাঁটা যাবে না। তবেই ডায়াবেটিক ফুট নিয়ন্ত্রনে রাখা যাবে।
ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক আরো জানান, ডায়াবেটিক ফুটের উন্নত চিকিৎসা দিচ্ছে ঢাকার ১৯৫ গ্রীনরোডের ‘ডায়াবেটিক ফুট এন্ড ওউন্ড হিলিং সেন্টার’। কেউ যদি চান তবে সেখান থেকে ব্যক্তিগতভাবে চিকিৎসাও নিতে পারেন। স্বল্প খরচে এবং উন্নত চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে সেখানে রোগটির নিবিড় পরিচর্যা চলে।
ডা. এম. মঞ্জুর আহমেদ আরো বলেন, ডায়াবেটিক ফুটের জন্য দিশেহারা হওয়ার কারণ নেই। ঢাকায় বা দেশে অনেকেই এখন এর চিকিৎসা করেছেন। এখন রোগীদের বা তার পরিবারের খুঁজে বের করতে হবে কারা এর চিকিৎসা ভাল করছেন।
উল্লেখ্য, ‘ডায়াবেটিক ফুট বা ডায়াবেটিক পা’ একটি ডায়াবেটিস মেলাইটাস জনিত পায়ের বৃহত্তর রক্তনালীর জটিলতা। ১৫% ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রে এই জটিলতা দেখা দিতে পারে। পৃথিবীতে যত রোগীর পা কাটা লাগে তার মধ্যে ৮৪% হল ডায়াবেটিক পা। ডায়াবেটিস রোগীর পায়ে আঘাত লাগলে বা ক্ষত হলে সেখানে ক্ষুদ্র রক্তনালীর বিকাশ, এক্সট্রাসেলুলার ম্যাট্রিক্স ও চামড়া ইত্যাদির বৃদ্ধি ইত্যাদি খুব ধীর গতিতে হয়।
ফলে এর নিরাময় প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হয় এবং তা শুকাতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এতে জীবানু সংক্রমনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ক্ষতস্থানে দুর্গন্ধযুক্ত পচন (গ্যাংগ্রীন) ধরে যায়। রোগীর জীবন রক্ষার্থে অনেক সময় পা কেটে বাদ দিতে হয়। শীতকালে এই রোগের প্রকোপ কম থাকলেও, গরমকালে বহু ডায়াবেটিস রোগী ডায়াবেটিক ফুট রোগে আক্রান্ত হন। তাই দেরী না করে আপনার চিকিৎসকের সাথে অতি সত্বর এই বিষয়ে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।