সার্চ ইঞ্জিন গুগল আজ বৃহস্পতিবার ডেটালি (Datally) নামে একটি সহজ ও স্মার্ট অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ চালুর ঘোষণা দিয়েছে। এই অ্যাপ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য মোবাইল ফোনের ডেটা বুঝতে পারা এবং তা কন্ট্রোল ও সেভ করার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হবে। ডেটালি যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড ৫.০ (ললিপপ) বা আরো আধুনিক সংস্করণের মোবাইল ফোনেই ব্যবহারের উপযোগী। এটি আজ থেকে বিশ্বব্যাপী গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যাবে।

সারা বিশ্বে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা ডেটা ব্যবহারে বড় সমস্যায় পড়েন এবং এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে থাকেন। এই সমস্যার দুর্দান্ত সমাধান দেবে ডেটালি। দুনিয়াজুড়ে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের ওপর গুগলের পরিচালিত একটি ব্যাপকভিত্তিক গবেষণায় ওঠে আসে যে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী অনেকেই তাঁদের স্মার্টফোনে ডেটা সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিয়ে সমস্যায় পড়েন এবং উদ্বেগের মধ্যে থাকেন। বিশেষ করে যারা স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নবাগতরা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন, যাঁরা ‘নেক্সট বিলিয়ন ইউজার’ নামে পরিচিত। স্মার্টফোনে নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা শুধু যে ডেটা ব্যবহারে ভারসাম্য রাখা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন থাকেন তা-ই নয়, বরং তাঁদের স্মার্টফোন থেকে ডেটা কখন কীভাবে কোথায় চলে যায় সেটিও বুঝতে পারেন না। কারণ কোনো অ্যাপে কীভাবে ডেটা রাখতে হবে তা তাঁরা জানেন না বলে নিয়ন্ত্রণও করতে পারেন না।

এসব সমস্যা সমাধানে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য গুগলের ডেটালিতে রয়েছে চারটি বিশেষ ফিচার বা বৈশিষ্ট্য। বৈশিষ্টগুলো হচ্ছে-

ডেটা সেভার : ডেটালিতে ডেটা সেভার অ্যাপ থাকায় স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা যখন-তখন ডেটা ব্যবহার এবং কনটেন্ট ও ইনফরমেশন বা তথ্য আপডেট তথা হালনাগাদ করে নিতে পারবেন। ডেটালির ডেটা সেভারটিতে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাপ-বাই-অ্যাপ অর্থাৎ অ্যাপ অনুযায়ী ডেটা কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণের সুযোগ রয়েছে। এর ফলে একজন ব্যবহারকারী যে অ্যাপে ডেটা রাখতে চান সেখানেই থাকবে বা ডেটা সেভ হবে। যেসব ব্যবহারকারীরা ডেটালি অ্যাপটি টেস্ট করা সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মোবাইল ডেটা সেভ করেছেন।

ডেটা সেভার বাবল : ডেটালিতে রয়েছে ডেটা সেভার বাবল। যখন একজন ব্যবহাকারী কোনো অ্যাপে যাবেন বা ঢুকবেন তখন ডেটালির এই ডেটা সেভার বাবল দেখা যাবে। ফলে ওই ব্যবহারকারী সহজেই ডেটা ব্যবহার করতে পারবেন। আবার যখন ওই অ্যাপে ডেটা ব্যবহার করা হবে তখন ডেটা সেভার বাবল ডেটা ব্যবহারের কারেন্ট রেট বা অবস্থা দেখাবে। এর ফলে একজন ব্যবহারকারী সহজেই ওই অ্যাপের ডেটা কি করবেন সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কিংবা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সেটিও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। মোবাইল ডেটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডেটা সেভার বাবল একটি স্পিডোমিটারের মতো কাজ করবে।

পারসনালাইজড অ্যালার্ট : ডেটালি অ্যাপে আছে পারসনালাইজড অ্যালার্ট। এর ফলে কোনো অ্যাপে প্রচুর পরিমাণে ডেটা ব্যবহার শুরু হলে, অর্থাৎ কী পরিমাণ ডেটা ব্যবহার হয়েছে সেটি দেখা যাবে। দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে এই অ্যালার্ট দেখা যাবে।

ওয়াই-ফাই ফাইন্ডার : ব্যবহারকারীরা কখনো কখনো অধিক পরিমাণে ডেটা ব্যবহার করতে চান। এ ধরনের মুহূর্তে ব্যবহারকারীদের একটি পরিকল্পনা থাকতে হয়, যেমন- কখন তারা এইচডি ভিডিও দেখতে চান। এ ক্ষেত্রে হাই-ব্যান্ডউইথ বা উচ্চ গতিসম্পন্ন পাবলিক ওয়াই-ফাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্য ডেটালিতে রাখা হয়েছে ওয়াই-ফাইন্ডার, যা ডেটালি কমিউনিটির পরিচালিত নিকটস্থ নেটওয়ার্কের খোঁজ বা তথ্য জানিয়ে দেবে। তখন একবার নেটওয়ার্ক পেয়ে গেলে ব্যবহারকারীরা নিজেরাই তাঁদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক রেট করতে পারবেন।

আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে ভিজিট করুন ডেটালির ওয়েবসাইট : datally.google.com.

গুগল সম্পর্কে

গুগলের মিশন বা অভীষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী তথ্য সংগঠিত করা এবং সেটাকে যতটা সম্ভব সর্বজনীন ব্যবহার ও উপকার সাধনের উপযোগী করে তোলা। সার্চ ইঞ্জিন, ম্যাপস বা মানচিত্র, জিমেইল, অ্যান্ড্রয়েড, গুগল প্লে, ক্রোমে ও ইউটিউব প্রভৃতি প্রযুক্তি সেবা ও প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে শত শত কোটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অর্থপূর্ণ ভূমিকা পালন ও অবদান রেখে চলেছে গুগল। একই সাথে গুগল বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ও জনপ্রিয়তা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হয়ে উঠেছে। গুগল হচ্ছে অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের একটি সাবসিডিয়ারি বা সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here