কথাসাহিত্যিক প্রশান্ত মৃধা। জন্ম ২০ নভেম্বর ১৯৭১, বাগেরহাটে। কর্মসূত্রে সরকারি কলেজে শিক্ষকতায় যুক্ত। গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি প্রবন্ধ ও কলামসহ নানা ধরনের গদ্য লিখে থাকেন। ব্যক্তিগত ও রম্য রচনায়ও আগ্রহী। বইয়ের সংখ্যা পঁয়ত্রিশ। সাহিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন ‘বাঙলার পাঠশালা আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কথাসাহিত্য পুরস্কার’, ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার’ এবং ‘কাগজ তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কার ২০০০’। প্রশান্ত মৃধার সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন অঞ্জন আচার্য।
যে বই বারবার পড়ি
কালীপ্রসন্ন সিংহ অনূদিত ‘মহাভারত’, রবীন্দ্রনাথ ‘ছিন্নপত্রাবলী’ ও ‘গল্পগুচ্ছ ’, জীবনানন্দ দাশের ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’।
যে বই পড়ব বলে রেখে দিয়েছি
এমন দুই-একটা বই সবসময়ই থাকে। এ মুহূর্তে যেমন শৈবাল মিত্রের ‘গোরা’ বইটি আছে। এ ছাড়া গোলাম মুরশিদের লেখা নজরুল-জীবনী ‘বিদ্রোহী রণক্লান্ত’ বইটি অর্ধেক পড়ে রেখে দিয়েছি অনিবার্য কারণে।
যে চলচ্চিত্র দাগ কেটে আছে মনে
ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ও ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, মৃণাল সেনের ‘খণ্ডহর’, সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’।
যে গান গুনগুন করে গাই
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কয়েকটি রবীন্দ্রসংগীত ও দুই-তিনটি নজরুলগীতি।
প্রিয় যে কবিতার পঙ্ক্তি মনে পড়ে মাঝে মধ্যে
জীবনানন্দ দাশের ‘বোধ’ কবিতাটির লাইন : ‘বলি আমি এই হৃদয়েরে; সে কেন জলের মতো ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়?’
খ্যাতিমান যে মানুষটি আমার বড় প্রিয়
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
যে ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না
সত্যি বলতে কী, এমন কোনো অনুভূতি আমার হয় না। বরং আমার ক্ষেত্রে উল্টাটা ঘটে, ঘুম আসে।
যা খেতে ভালোবাসি খুব
মাছ-ভাত।
যা সহ্য করতে পারি না একেবারেই
অসততা।
জীবনে যার কাছে সবচেয়ে বেশি ঋণী
দিদিমা।
যেমন নারী আমার পছন্দ
বুদ্ধিমতী।
যেখানে যেতে ইচ্ছে করে
নদীর পাড়ে
যেভাবে সময় কাটাতে সবচেয়ে ভালো লাগে
বই পড়ে।
যে স্বপ্নটি দেখে আসছি দীর্ঘদিন ধরে
মানুষে মানুষে সাম্য।
যে কারণে আমি লিখি
নিজের ভেতরে কিছু কথা জমে যায়। সেগুলো অপরকে জানানোর জন্য।
নিজের যে বইটির প্রতি বিশেষ দুর্বলতা আছে।
দুর্বলতা প্রকাশ করা যায় এমন কোনো বই আমি লিখিনি
ভালোবাসা মানে আমার কাছে…
ভালোবাসা ।
আমার চোখে আমার ভুল
আমার আলস্য (কেউ কেউ এটাকে আমার দুর্বলতাও বলতে পারেন)।
জীবনে যা এখনো হয়নি পাওয়া
পাওয়ার ব্যাপার হয়নি বলেই জীবনের প্রতি এত আকাঙ্ক্ষা।
যে স্মৃতি এখনো চোখে ভাসে
বাল্যের দিনগুলো।
যা হতে চেয়েছিলাম, পারিনি
বলতে গেলে, আমি তেমন করে কিছুই হতে চাইনি। ওই ব্যাপারটাই আমার ভেতর ছিল না, এখনো নেই। তবে একসময় ফুটবল দলের লিঙ্কম্যান হতে চেয়েছিলাম। ওটা হতে পারলে ভালো লাগত। কিন্তু সেই মেধা আমার ছিল না।
জীবনের এ-প্রান্তে এসে যতটা সফল মনে হয় নিজেকে
মোটেও না। সফলতা ব্যাপারটাই আমার কাছে বানোয়াট মনে হয়।
কোনটা ভালো লাগে— পাহাড় নাকি সমুদ্র?
পাহাড়। (ওখানে নির্জনতা আছে)।
কোনটা বেশি টানে— বর্ষার বৃষ্টি নাকি শরতের নীল আকাশ?
বর্ষার বৃষ্টি।